Wellcome to National Portal
ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৩rd জুলাই ২০২৫

আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য" আমার দেশ পত্রিকাকে এফআরসি চেয়ারম্যান ড. মোঃ সাজ্জাদ হোসেন ভূইয়া


প্রকাশন তারিখ : 2025-07-02

                                                         

ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন ভূইয়া পেশাগত জীবনে ছিলেন একজন উচ্চপদস্থ রাজস্ব কর্মকর্তা। আর্থিক, রাজস্ব ও প্রশাসনিক বিষয়ে তিন দশকের বেশি সময়ের অভিজ্ঞতা। গত ৪ মে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে তিনি ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। এফআরসির কার্যক্রম নিয়ে আমার দেশ’র অর্থনৈতিক রিপোর্টার কাওসার আলম তার সঙ্গে কথা বলেন।

বাংলাদেশে আর্থিক খাতে অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার অন্যতম একটি বিষয় হচ্ছে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক হিসাব বিবরণী। হিসাব বিবরণী প্রস্তুতিতে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরএস), ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অডিটিং (আইএসএ) এবং ইন্টারন্যাশনাল একাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএএস) থাকলেও এসব স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ না করেই হিসাব বিবরণী প্রস্তুত করা হয়। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে অডিটর ফার্মের এসব দেখভাল করার কথা থাকলেও খুব কমসংখ্যক ফার্মই এটি করে থাকে। হিসাব বিবরণীর মান নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকেই রয়েছে নানা প্রশ্ন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নানা আলোচনা, বিতর্কের পর ২০১৫ সালে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট (এফআরএ) পাস হয় এবং তারই আলোকে গঠিত হয় ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি)।

 

এ প্রতিষ্ঠানটি কার্যকরের মাধ্যমে আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন ভূইয়া। তিনি বলেন, সঠিকভাবে কাজ করতে পারলে এফআরসির পক্ষে আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।

 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের হিসাব ও নিরীক্ষামান সঠিকভাবে সম্পাদিত হলে আয়কর বিভাগ ন্যায্য আয়কর পাবে, ভ্যাট বিভাগ ন্যায্য ভ্যাট পাবে, ব্যাংক ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সঠিক সম্পদের মূল্যমান পাবে এবং শেয়ারবাজারের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা সঠিক আর্থিক চিত্র পেয়ে বিনিয়োগের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এতে স্বাভাবিক নিয়মেই আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। এফআরসি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য সম্পর্কে সাজ্জাদ হোসেন ভূইয়া বলেন, হিসাব ও নিরীক্ষা পেশার মান নির্ধারণের পাশাপাশি পেশার উন্নয়ন সাধন করাই এফআরসির লক্ষ্য।

 

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব বাস্তবতার প্রেক্ষিতে হিসাব ও নিরীক্ষা মানদণ্ডে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আরো কিছু পরিবর্তন আনার জন্য কাউন্সিল বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আইসিএবি এবং আইসিএমইবি থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে যাচ্ছে। তবে এ ধরনের মানদণ্ড প্রস্তুতে ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

 

২০১৭ সালে এফআরসি গঠিত হওয়ার পর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিধিবিধান প্রস্তুত হয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিরীক্ষক ও নিরীক্ষা ফার্ম তালিকাভুক্তি বিধিমালা-২০২২। আরো বেশকিছু বিধিমালা অনুমোদনের অপেক্ষায় এবং আরো কিছু বিধিমালা প্রণয়ন করা হবে জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, এসব বিধিবিধান প্রণীত হলে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমে আরো গতিশীলতা তৈরি হবে। বর্তমানে জনবল সংকটকে প্রতিষ্ঠানের প্রধান সমস্যা হিসেবে জানান তিনি। ৮ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কোনো জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে জনবল নিয়োগের জন্য কাউন্সিলের পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটা প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে।

 

তিনি বলেন, এটি একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে। এখানে অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগ দেওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ।

 

আগামী ৯ জুলাই বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে প্রথমবারের মতো একটি সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে এফআরসি। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ‘এ অ্যান্ড এ সামিট’ নামে ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন অর্থ উপদেষ্টা। দুদক চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থসচিব, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ অংশীজনরা অংশ নেবেন। ওই সম্মেলনের মাধ্যমে অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে এফআরসি নীতিমালা প্রণয়ন করবে বলে জানান চেয়ারম্যান। এফআরসি প্রতিষ্ঠার পেছনে বিশ্বব্যাংক কারিগরি ও পরামর্শমূলক সহায়তা দিচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বের ৫২টি দেশে এফআরসি রয়েছে, যারা ওইসব দেশের হিসাব ও নিরীক্ষামান নিয়ে কাজ করে। হিসাবমান ও নীরিক্ষার মানদণ্ডে বাংলাদেশ এফআরসি যুক্তরাজ্যের মডেল অনুসরণ করছে। এক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাজ্য অগ্রগামী রয়েছে বলে জানান তিনি।

Source : https://www.dailyamardesh.com/business/amdwsskcpgzfx